৩২ বিট কম্পিউটার আর ৬৪ বিট কম্পিউটার এর পার্থক্য


আমরা জারা কম্পিউটার ব্যাবহার করি তারা সবাই 32 bit, 64 bit এর নাম সুনেছি কিন্তু সবাই চিনিনা। 32 bit আর 64 bit এর জন্য আলাদা আলাদা প্রসেসর, অপারেটিং সিস্টেম, সফটওয়ার, আর ড্রাইভার আছে। তবে নতুনদের মধ্যে অনেকেই জানেন না এই ৩২ বিট আর ৬৪ বিট (X86 ও X64) কি বা Difference between 64bit and 32bit। এদের মধ্যে পার্থক্য কি, কি জন্য ব্যবহার করা হয় বা নিজের
কম্পিউটারটি কত বিটের তা কিভাবে চেক করবেন তাও অনেকের অজানা। এটি নিয়েই আমার পোষ্টটি লেখা। এখানে প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়ার চেস্টা করছি।

৩২ বিট আর ৬৪ বিট এ পার্থক্য কিঃ

১। ৩২ বিট এর চেয়ে ৬৪ বিটে উইন্ডোজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশি, বিশেষ করে Kernel Patch Protection অনেক বেশি শক্তিশালী হয় ৬৪ বিটে। Kernel হল প্রসেসর, হার্ডওযার, ডিভাইস ড্রাইভার এর সাথে অন্যান্য সফটওয়ারের সমন্বয় রক্ষা করে চলার একটি পদ্ধতি যার উপর ভিত্তি করে অপারেটিংস সিস্টেম তৈরি হয়। একেক অপারেটিং সিস্টেমে একেক ধরনের Kernel ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়।

২। ৬৪ বিট উইন্ডোজে ডিজিটাল সাইন ছাড়া ড্রাইভার ইন্সটল করা যায় না। ডিজিটাল সাইনটা এক প্রকার কোম্পানির সীলের মত। যখন ঐ সফটওয়ারটাকে ভাইরাস আক্রমন করে বা এর মধ্যে কোন পরিবর্তন হয় তখন ডিজিটাল সাইনটি পরিবর্তিত হয়ে যায় যাকে ভাইরাস হিসেবে উইন্ডোজ ধরে নেয়। ৩২ বিটেও ডিজিটাল সাইন ছাড়া ড্রাইভার ইন্সটল না করার অপশন আছে তবে এটি ডিফল্ট সেটিংস নয়। কিন্তু ৬৪বিটে উইন্ডোজ Digital Sign* Broken কে অনুমোদন করে না।

৩। ৬৪ বিট প্রসেসরে ৬৪ বিট এবং ৩২ বিট দুই ধরনের উন্ডোজই (অপারেটিং সিস্টেম) ব্যবহার করা যায়। তবে ৩২ বিট প্রসেসরে শুধু মাত্র ৩২ বিট উন্ডোজই ব্যবহার করা যায়। সুতরাং ৬৪বিট উইন্ডোজ ব্যবহার করতে চাইলে ৬৪বিট প্রসেসরই লাগবে।

৪। ৬৪বিট উইন্ডোজে কিছু কিছু ৩২বিটের সফটওয়্যার, আর ড্রাইভার রান করা গেলেও অনেক সময় সমস্যা দেখা দেয়, সঠিকভাবে কাজ করে না। তবে ৩২বিট উইন্ডোজে ৬৪বিট সফটওয়ার বা ড্রাইভার কোনটাই কাজ করে না। অর্থাৎ সঠিকভাবে কাজ করার জন্য ৬৪বিটের জন্য ৬৪বিটের সফটওয়ার আর ড্রাইভার যেমন দরকার তেমন ৩২ বিটের জন্যও ৩২বিটের সফটওয়ার আর ড্রাইভার দরকার। আবার ১৬বিট প্রোগ্রামগুলো ৩২বিটে কাজ করলেও ৬৪বিটে কাজ করে না। ৬৪ বিটের প্রোগ্রামগুলো ৩২বিটের চেয়ে পারফরমেন্স ভাল দেখায়। যেমন ক্রাশ করা বা এরকম অন্যান্য সমস্যাগুলো থেকে ৬৪বিট প্রোগ্রামগুলো মুক্ত বললেই চলে।

৫। ৬৪বিট প্রসেসর সাধারণত x64 এবং ৩২বিট প্রসেসর সাধারণত x86 গতিতে চলে।

৬। ৩২ বিটের জন্য সাধারণত 512MB থেকে 4 GB পর্যন্ত RAM Recommend করা হয় যেখানে ৬৪বিটের জন্য 4 GB Recommend করা হয়। এর চেয়ে কম হলেও চলে।

সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল 4 GB এর উপর RAM ব্যবহার করতে চইলে অবশ্যই ৬৪বিট প্রসেসর আর উইন্ডোজ ব্যবহার করতে হবে। কারণ ৩২ বিটে 4 GB এর উপর RAM ব্যবহার করা হলেও তা ব্যবহৃত হয় না। এমনকি অনেক সময় সর্বোচ্চ 3 GB পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়ে বাকিগুলো RAM অব্যবহৃত থেকে যায় কারণ হার্ডওয়ার সাপোর্ট করে না। অন্যদিকে ৬৪বিটে 1GB থেকে 128GB এর চেয়ে বেশি RAM সাপোর্ট করে। যদিও এখনো 128GB RAM ব্যবহারের রেকর্ড শুনা যায়নি। তবে ব্যবস্থাটা রাখা হয়েছে।

যে সব কাজের জন্য বেশি RAM প্রয়োজন তার জন্য ৬৪বিটের বিকল্প নেই। যেমন হলিউডের যে ফিল্মগুলো তৈরি করা হয় তাতে সব ৬৪বিটের প্রোগ্রামগুলোই ব্যবহার করা হয়। তেমনি 3D, High powerful Graphics আর Multimedia জন্য ৬৪বিট একমাত্র সমাধান। তবে বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করে ৩২ বিটেও 4G এর বেশি RAM ব্যবহার করা যায়।

আশাকরি কারো মনে আর এই প্রশ্ন থাকবে না যে -৩২বিট আর ৬৪বিটে পার্থক্য কি বা ৩২বিট নাকি ৬৪বিট কোনটা ভাল।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন