কাল হরতাল ডাকল বিএনপি ও জামায়াত


আগামীকাল বৃহস্পতিবার সারা দেশে পৃথকভাবে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ বুধবার দলটির নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে এ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
অপরদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল
রফিকুল ইসলাম খান আজ সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে দলটির পক্ষ থেকে কালকের হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

বিএনপির কর্মসূচি
আজ বিকেলে ককটেল বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে নয়া পল্টনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে দলটির পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। সংঘর্ষে দলটির বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হন। এ ঘটনার জন্য সরকারকে দায়ী করে এর প্রতিবাদে আগামীকাল সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের এই কর্মসূচি দেওয়ার কথা সংবাদ সম্মেলনে জানান মির্জা ফখরুল।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল দাবি করেন, ‘পুলিশের হামলায়’ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবদুস সালামসহ দেড় হাজারের বেশি নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। সরকারের উদ্যোগে সুপরিকল্পিতভাবে ওই হামলা চালানো হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
পুলিশ দাবি করেছে, বিএনপিকে তারা সতর্ক করেছিল, এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফখরুল পাল্টা প্রশ্ন করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নাশকতার আশঙ্কা করলে যথাযথ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়নি কেন?
ফখরুল আরও বলেন, ‘বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ চলছিল। সভার প্রায় শেষ পর্যায়ে আকস্মিকভাবে বিনা উসকানিতে উন্মত্তের মতো পুলিশ হামলে পড়ে।’ এ সময় বিভিন্ন অলি-গলি থেকে যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতারাও হামলায় অংশ নেন বলে তিনি দাবি করেন।
দলের নেতা-কর্মীদের ‘নিশ্ছিদ্র প্রতিরোধ’ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘কঠিন ও চূড়ান্ত প্রতিরোধ ছাড়া এখন আর কোন উপায় নেই।’

জামায়াতের বিবৃতি
জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান আজ এক বিবৃতিতে বলেন, ১৪ দলীয় জোট সরকারের দেশব্যাপী গণহত্যা ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদ এবং দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির দাবিতে ঘোষিত গণবিক্ষোভ কর্মসূচিতে সারা দেশে বাধা ও মিছিলে গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে আগামীকাল ৭ মার্চ সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করছে দলটি।
জামায়াতের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, সারা দেশে আজ তাদের পূর্ব ঘোষিত গণবিক্ষোভ কর্মসূচি পালনে বাধা দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের গুলিতে দলটির দুই শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এ ছাড়া গ্রেপ্তার হয়েছেন দেড় শতাধিক নেতা-কর্মী।

হরতালের কবলে দেশ
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের নেতা সাঈদীর বিরুদ্ধে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ওই দিন সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকে জামায়াত। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সাঈদীকে ফাঁসির আদেশ দিলে সারা দেশে সহিংসতা চালায় জামায়াত-শিবির। একই সঙ্গে এই রায়ের বিরুদ্ধে রোববার ও সোমবার (৩ ও ৪ মার্চ) সারা দেশে টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডাকে দলটি।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ৫ মার্চ মঙ্গলবার সারা দেশে সকাল সন্ধ্যা হরতাল ডাকেন। বিএনপির ডাকা হরতালে সমর্থন দেয় জামায়াত।
মাত্র এক দিনের ব্যবধানে বিএনপি ও জামায়াত পৃথকভাবে সারা দেশে কাল সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিল। ফলে চলতি সপ্তাহে মাত্র এক দিন হরতালমুক্ত ছিল।

1 comments: